মুন্সিগঞ্জের ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ে সড়ক দুর্ঘটনার হটস্পটে পরিণত হয়েছে। জেলার সিরাজদিখান উপজেলার কুচিয়ামোড়া থেকে লৌহজং উপজেলার মাওয়া পর্যন্ত ১৯ কিলোমিটার পথে একের পর এক দুর্ঘটনায় বাড়ছে হতাহতের সংখ্যা। গত এক মাস ১০ দিনে এই এক্সপ্রেসওয়েতে ২৩টি দুর্ঘটনা ঘটে। এতে ১২ জন নিহত হন। আহত হয়েছেন অন্তত ৪০ জন।
সর্বশেষ গতকাল শনিবার সকালে জেলার শ্রীনগর উপজেলার কামারখোলা এলাকায় ট্রাকের পেছনে প্রাইভেট কার ধাক্কা দিলে দুজন আহত হন।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার দুপুরে সিরাজদিখান উপজেলার কেয়াইন ইউনিয়নের নিমতলা এলাকার এক্সপ্রেসওয়েতে দাঁড়িয়ে থাকা রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্সে পেছন থেকে একটি যাত্রীবাহী বাস ধাক্কা দেয়। গোল্ডেন লাইন পরিবহনের ওই বাসের ধাক্কায় অ্যাম্বুলেন্সে থাকা অন্তঃসত্ত্বা নারী রোজিনা বেগম (৩০) বেঁচে গেলেও একই পরিবারের চারজনসহ পাঁচজন নিহত হন।
জানা গেছে, ১ মে রাতে শ্রীনগরের ওমপাড়া এলাকায় এক্সপ্রেসওয়েতে মাওয়াগামী প্রাইভেট কারের ধাক্কায় অজ্ঞাতনামা এক যুবক নিহত হন। গত ২৯ এপ্রিল একই উপজেলার ষোলঘর এলাকায় দ্রুতগতির যাত্রীবাহী বাসের ধাক্কায় এক বৃদ্ধ মারা যান। ২৬ এপ্রিল ওই উপজেলার হাসাড়া এলাকায় ট্রাকের ধাক্কায় মো. আলিমুল নামের এক আরোহী নিহত হন। আগের দিন ২৫ এপ্রিল সকাল সাড়ে ৯টার দিকে সিরাজদিখানের নিমতলা কলাবাগান এলাকায় বেপরোয়া গতিতে মোটরসাইকেল চালাতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রেলিংয়ের সঙ্গে ধাক্কায় চালক ইউসুফ খান (৫৪) ঘটনাস্থলেই মারা যান।
সিরাজদিখানের শেখরনগর গ্রামের বাসিন্দা ও ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী আরমান শেখ বলেন, ‘ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের শ্রীনগর, লৌহজং ও মাওয়া এলাকা দুর্ঘটনার হটস্পটে পরিণত হয়েছে। যানবাহনের গতিসীমা লঙ্ঘন, ওভারটেকিং ও পর্যাপ্ত ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের অভাব এসব এলাকায় দুর্ঘটনার মূল কারণ। নিয়মিত ট্রাফিক নজরদারি এবং স্পিডব্রেকার স্থাপনসহ স্থানীয় জনসচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে, তবেই দুর্ঘটনা বন্ধ হবে।’
চাকরিজীবী ইব্রাহিম মোল্লা বলেন, চালকদের অসতর্কতা, সড়ক চিহ্নের অভাব এবং রাতে অন্ধকারে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা না থাকায় দুর্ঘটনার ঝুঁকি বেড়েছে। এ সমস্যা সমাধানে দ্রুত হটস্পটগুলোতে প্রযুক্তিনির্ভর নজরদারি ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন জরুরি।
অটোরিকশাচালক মো. মনির শেখ বলেন, ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের দুর্ঘটনার হটস্পটগুলো জননিরাপত্তার জন্য মারাত্মক হুমকি সৃষ্টি করেছে। প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ এই সড়ক ব্যবহার করেন। কিন্তু সুনির্দিষ্ট ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোর যথাযথ সুরক্ষা না থাকায় প্রাণহানির ঘটনা ঘটছে।
আপনার মতামত লিখুন :