খুলনা-সাতক্ষীরা মহাসড়কে পিচ তুলে দেওয়া হচ্ছে ইট।
গাজী আব্দুল কুদ্দুস, ডুমুরিয়া। খুলনা মহানগরীর অন্যতম প্রবেশদ্বার ‘জিরো পয়েন্ট’। এর একটু দক্ষিণে এগোলেই খুলনা-সাতক্ষীরা মহাসড়ক। আর এখান থেকেই প্রতিদিন শুরু হাজার হাজার যানবাহন ও মানুষের ভয়ংকর যাত্রা। মাত্র সাড়ে চার বছর আগে ১৫০ কোটি টাকার সড়ক যেন মরণফাঁদ।
৬০ কিলোমিটার সড়কের খুলনা-চুকনগর পর্যন্ত প্রায় ৩০ কিলোমিটার সড়কের কোথাও পিচ উঠে গেছে, কোথাও উঁচু-নিচু, আবার কোথাও ছোট-বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে প্রতিনিয়ত জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এই সড়কে হেলেদুলে চলছে ভারী যানবাহন।
অভিযোগ উঠেছে, নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহার ও ঠিকাদারের গাফিলতিতে ভয়ংকর রূপ নিয়েছে দক্ষিণের অন্যতম এই আঞ্চলিক সড়কটি। তবে সড়ক বিভাগ বলেছে, সড়কটি সংস্কারের জন্য এরই মধ্যে প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে।
আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া শেষে আগামী এক মাসের মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত স্থানে কাজ শুরু হবে।
খুলনা সড়ক বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, খুলনা-চুকনগর-সাতক্ষীরা মহাসড়কটির দৈর্ঘ্য ৬৪ কিলোমিটার। এর মধ্যে নগরীর জিরো পয়েন্ট থেকে ডুমুরিয়ার চুকনগর-আঠারোমাইল নামক স্থান পর্যন্ত প্রায় ৩৩ কিলোমিটার খুলনা জেলার মধ্যে। বাকি অংশ সাতক্ষীরা জেলার।
২০১৮ সালে ওই সড়কের প্রশস্তকরণ ও পুনর্নির্মাণ কাজ শুরু হয়। খুলনা অংশের ১১৬ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটির আগে সড়কটির প্রশস্ততা ছিল ১৮ ফুট। সংস্কার করে সেটিকে ৩৬ ফুট করা হয়। প্রকল্পের আওতায় প্রশস্তকরণ ও পুনর্নির্মাণের পাশাপাশি আটটি কালভার্ট, বাজার এলাকায় ড্রেন ও গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় বাস থামার মতো স্থান তৈরি করা হয়। তৎকালীন প্রভাবশালী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘মোজাহার এন্টারপ্রাইজ’ প্রকল্পটি ২০২০ সালের জুনে শেষ করে।
কিন্তু বছর না ঘুরতেই করুণ দশা হতে শুরু করে ১৫০ কোটি টাকা ব্যয়ের সড়কটি। এমন অবস্থায় তিন কোটি টাকার নতুন প্রকল্প নিয়েছে সড়ক বিভাগ।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলেছেন, এক সময় এ সড়কে প্রতিদিন গড়ে ১০ হাজার যানবাহন চলাচল করলেও সেটি এখন দ্বিগুণ হয়েছে। আবার এ সড়কে সর্বোচ্চ সাড়ে ২২ মেট্রিক টন পণ্য নিয়ে যানবাহন চলার অনুমতি থাকলেও সেখানে ৫০ মেট্রিক টনের ট্রাক চলছে। ১৬০ কোটি টাকার প্রকল্পের কাজও মানসম্মত হয়নি, যে কারণে সড়কের মাঝখানে বেশি ক্ষতি হয়েছে।
স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সড়কটির খুলনা অংশের ৩৩ কিলোমিটারের অর্ধশত স্থানে ছোট-বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে এবং ২০টির বেশি স্থানে পিচ উঠে গেছে। ফলে প্রায়ই এ সড়কে দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে সাধারণ যাত্রী ও পথচারীরা। বর্তমানে এ সড়কে পিচ তুলে ইট দেওয়া হচ্ছে। যা জনগণের সাথে তামাশা করা হচ্ছে, বলে তারা মনে করছেন।
সড়ক বিভাগ খুলনার নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ তানিমুল হক বলেন, ‘বিগত সময়ে সড়কের ফাউন্ডেশন ভালো না হওয়ায় দ্রুত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। খুলনা অঞ্চলের জন্য সড়কটি গুরুত্বপূর্ণ।
আপনার মতামত লিখুন :