আড়ংঘাটা প্রেসক্লাবে সন্ত্রাসী হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ: সাংবাদিক মহলে তীব্র ক্ষোভ


onlinedesk প্রকাশের সময় : জুন ২৮, ২০২৫, ৯:৩৯ অপরাহ্ন /
আড়ংঘাটা প্রেসক্লাবে সন্ত্রাসী হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ: সাংবাদিক মহলে তীব্র ক্ষোভ

খুলনা মহানগরীর আড়ংঘাটা থানাধীন শলুয়া স্লুইচগেটের পাশে অবস্থিত আড়ংঘাটা প্রেসক্লাবে সন্ত্রাসীদের হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনায় সাংবাদিক মহলে তীব্র ক্ষোভ ও আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। মঙ্গলবার (২৫ জুন) ভোররাতে সংঘটিত এই ঘটনায় এলাকার গণমাধ্যমকর্মীরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।

প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল ইসলাম অভিযোগ করে জানান, শলুয়া এলাকার কুখ্যাত সন্ত্রাসী সুজন সরকার (৩০), রসুল ফকির (৪৫), ওসমান মোল্লা (২৫), সেলিম মোড়ল (৩০), দিপু সরকার (৩৮) ও সবুজ শেখ (২৭)-সহ তাদের সহযোগীরা পরিকল্পিতভাবে এই হামলা চালায়। তারা সন্দেহ করে যে, এমদাদুল প্রশাসনকে তথ্য দিয়ে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সহায়তা করেছেন এবং তাদের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করেছেন।

এমদাদুল আরও জানান, হামলাকারীরা অফিসের আসবাবপত্র, কম্পিউটার, জানালা-দরজা ভেঙে ফেলে এবং ৯ বছরের গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র পুড়িয়ে দেয়। তিনি বলেন, “তারা আমার উপর ব্যক্তিগত আক্রোশ থেকে এই হামলা চালিয়েছে। আমি থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছি।”

তিনি আরও বলেন, সুজন সরকার শুধু একজন সাংবাদিক বিরোধী সন্ত্রাসী নয়, বরং গোটা শলুয়া অঞ্চলের মানুষের জন্য এক আতঙ্কের নাম। সে শলুয়ার কুখ্যাত অপরাধী এবং আরিফ হত্যা মামলার প্রধান আসামি। প্রশাসন তার কাছ থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধার করেছে। তার বিরুদ্ধে ডাকাতি, মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজি, ভূমি দখল, সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে অর্থ আদায়সহ বহু অভিযোগ রয়েছে। সুজন পূর্ব বাংলা কমিউনিস্ট পার্টির আঞ্চলিক কমান্ডার হিসেবেও পরিচিত।

এ ঘটনায় খুলনা এবং ঢাকার বিভিন্ন প্রেসক্লাব ও সাংবাদিক সংগঠন তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন। সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ একে গণমাধ্যমের ওপর হামলা হিসেবে আখ্যায়িত করে দোষীদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন। তারা বলেন, “প্রেসক্লাব কোনো রাজনৈতিক দলের ব্যক্তিগত সম্পত্তি নয়, এটি মুক্ত সাংবাদিকতার প্রতীক। সেখানে হামলা মানে মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ওপর হামলা।”

ঘটনার প্রতিবাদে যারা বিবৃতি দিয়েছেন তাদের মধ্যে রয়েছেন—ঢাকা প্রেসক্লাবের পক্ষ থেকে আলহাজ্ব মোঃ তৈয়বুর রহমান (চেয়ারম্যান, হৃদয় গ্রুপ), বিচারপতি ছিদ্দিকুর রহমান, মোঃ সাইদুর রহমান রিমন (দৈনিক দেশ বাংলা), প্রফেসর মোঃ মাসুদ এ খান (বেটার বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন), চলচ্চিত্র পরিচালক কাজী হায়াৎ, অভিনেতা মনোয়ার হোসেন ডিপজল, সাংবাদিক নেতা এস এম মোরশেদ, আওরঙ্গজেব কামাল, দেলোয়ার হোসেনসহ বহু গণমাধ্যম সম্পাদক, প্রকাশক এবং সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ।

এদিকে, আড়ংঘাটা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ তুহিনুজ্জামান বলেন, “ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। আমরা বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি এবং অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”

সাংবাদিক সমাজ আশাবাদ ব্যক্ত করেছে, দোষীদের দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে এবং গণমাধ্যমকর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রশাসন কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।

>